গোটা বিশ্বের কাছে ত্রাস হয়ে উঠেছে ক্ষুদ্র এক ভাইরাস। করোনার কামড় থেকে কবে মিলবে রেহাই, জানে না কেউই। প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। ভারতেও এ সংখ্যায় তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন রেকর্ড। কিন্তু এই মারণ ভাইরাসের কারণে ঝাড়খণ্ডের এক পরিবারের যা পরিণতি হয়েছে, তা ভাবনারও অতীত।
করোনা আক্রান্ত মায়ের শেষকৃত্যে অংশ নিয়ে আক্রান্ত হন পাঁচ ছেলেও। ১৫ দিনের মধ্যেই মৃত্যু হয় সবারই। অর্থাৎ মাত্র কিছুদিনের ব্যবধানে শেষ হয়ে গেল গোটা পরিবার!
মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ডের ধানবাদের কাতরাসে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত জুন মাস একটি পারিবারিক বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিল ওই পরিবারটি। আনন্দে মেতে উঠেছিল সকলেই। বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন পরিবারের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষটিও। ৮৮ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধাও আতঙ্ক কাটিয়ে আনন্দেই কাটাচ্ছিলেন দিনগুলো। কিন্তু বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ হতেই ক্রমশ অসুস্থ হতে শুরু করেন তিনি। অসুস্থতা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, তাকে বাড়িতে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ে। ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। দিন পনেরো আগে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
মায়ের মৃত্যুতে শোকে ভেঙে পড়ে বৃদ্ধার পাঁচ ছেলে। শেষকৃত্যে তারাই মায়ের দেহ কাঁধে করে নিয়ে যান শ্মশানে। তার অন্ত্যেষ্টি সম্পূর্ণ করে বাড়িতে ফিরেই ছেলেদের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে। হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, মৃত্যুর সময় করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ওই বৃদ্ধা।
এরপর ধীরেধীরে একে একে মৃত বৃদ্ধার সব সন্তানরাই অসুস্থ হয়ে পড়তে শুরু করেন। সবাইকেই কয়েক দিনের ব্যবধানেই ভর্তি করতে হয় হাসপাতালে। আর কী মর্মান্তিক, ১৫ দিনের মধ্যেই পাঁচ ছেলের মৃত্যু হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, পাঁচজনের মধ্যে একজনের আগে থেকেই ক্যান্সার ছিল। ফলে তার মৃত্যু ক্যান্সারে হয়েছে ধরে নেয়া গেলেও বাকি চার ছেলেরই মৃত্যু হলো করোনায়। অর্থাৎ ১৫ দিনের মধ্যে গোটা পরিবারটাই শেষ হয়ে গেল। গোটা এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
জানা গেছে, রাঁচির রাজেন্দ্র ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক ছেলের মৃত্যু হয়। মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে বাকি দুই ছেলে মারা যান ধানবাদের করোনা হাসপাতালে। সোমবার রাতে রাজেন্দ্র ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সে মারা গেছেন বৃদ্ধার আরো এক ছেলে।
মাত্র ১৫ দিনের মধ্যেই একই পরিবারের ছয়জনের মৃত্যুর ঘটনা সারা দেশে নজিরবিহীন বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। অনেকেই বলছেন, এই ঘটনা থেকেই বাকিরা শিক্ষা নিক।
Leave a Reply