আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ এড়াতে মাদক কারবারীদের এর আগেও নানা কৌশল অবলম্বন করতে দেখা গেছে। তবে এবার লাশবাহী ফ্রিজে ফেনসিডিল ভর্তি বস্তা কাফনের কাপড়ে মুড়িয়ে তা মরদেহ হিসেবে দেখিয়ে পাচারের চেষ্টা করেছিল এ চক্রের সদস্যরা। কিন্ত গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) নজদারীর ফলে এবারো তা ব্যার্থ হয়। গ্রেপ্তারকৃত মাহাবুবুল হাসান, হাসানুর রহমান সবুজ, মো. সোহেল মিয়া ওরফে এমিলে, রোমন, শামীম হোসেন ও আল আমিন ৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গতকাল সোমবার রিমান্ডে আনা হয়েছে।
সোমবার (৫ অক্টোবর) ভোরের কাগজকে এসব তথ্য জানান অভিযানের নেতৃত্ব দেয়া ডিবি গুলশান বিভাগের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মাদক নিয়ন্ত্রণ টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুবুল আলম। ডিবির এ কর্মকর্তা বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত রবিবার শাহবাগ থানাধীন গণপূর্ত স্টাফ কোয়ার্টারের সামনে অভিযান চালাই আমরা।
বিকেলের দিকে সামনে একটি কালো রংয়ের মাইক্রোবাসের পেছনে লাশবাহী ফ্রিজিং এ্যাম্বুলেন্স আসার সময় গাড়ি দুটি থামানো হয়। পরে এ্যাম্বুলেন্স খুলে কাফনে মোড়ানো একটির ওপর আরেকটি রাখা চারটি লাশ দেখা যায়। যা দেখে আরো সন্দেহ বেড়ে যায়। পরে কাফন খুলে দেখা যায় বস্তা। যা খুলে ২ হাজার ফেনসিডিল পাওয়া যায়। তিনি আরো বলেন, প্রতিটিতে ২৫০ টি করে মোট ৮টি বস্তা কাফনের কাপড়ে মুড়িয়ে মরদেহের আদল তৈরী করে তারা। মূলত গ্রেপ্তারকৃতরা পরস্পর যোগসাজসে এই রকম অভিনব কায়দায় ফেনসিডিল কুমিল্লা জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে সংগ্রহ করে ঢাকা শহরে নিয়ে আসেন। এরপর ফেন্সিডিলগুলো সুযোগ বুঝে তারা রাজধানীসহ ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় পাইকারী ও খুচরা বিক্রয় করেন।
এ চক্রের মূলহোতা মো. সোহেল মিয়া ওরফে এমিলে। ফেনসিডিল পাচারের কৌশল পুরোনো হয়ে যাওয়ায় নতুন কৌশল হিসেবে তারা এভাবে ফেনসিডিলে প্রথম চালান ঢাকায় আনছিল। এ জন্য ১ লাখ টাকায় গাড়ি ভাড়া করেছিলেন তারা। পরে প্রথম চারজনের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওইদিনই শামীম হোসেন ও আল আমিনকে মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় করা মামলায় গ্রেপ্তাররকৃতদের সোমবার আদালতে রিমান্ডের জন্য পাঠানো হয়। এ সময় আদালত শুনানি শেষে শামীম হোসেন ও আল আমিনকে ২দিন ও বাকি ৪ জনের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে আরো তথ্য মিলবে বলে আমরা আশা করছি। গুলশান ডিবির উপকমিনার মশিউর রহমান বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের শূণ্যসহিষ্ণু নীতি অনুস্মরণ করছি আমরা।
তবে মাদক ব্যবসায়ী বা সেবীরা নানা কৌশল অবলম্বন করে প্রতিনিয়ত দেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে আমাদের সীমান্ত রক্ষায় যারা নিয়োজিত আছেন তারা যথেষ্ট স্মার্ট ও প্রযুক্তি নির্ভর। তারা যদি মূল সরবরাহের জায়গায় থেকে বন্ধ করে দিতে পারেন তাহলে দেশের অভ্যান্তরে মাদক ব্যবসায়ীদের ধরতে এত বেগ পোহাতে হয়না।
Leave a Reply