যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান।
স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি ও মুজিব জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতিসংঘ মহাসচিবসহ বিশ্ব নেতারা বাংলাদেশকে অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছেন। বার্তা পাঠানোর মধ্যে রয়েছেন, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেস, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লা দিমির পুতিনসহ বিশ্ব নেতারা। তারা সবাই গতকাল শুক্রবার মুজিবজন্মশত বার্ষিকী অনুষ্ঠানে এই বার্তাগুলো পাঠ করে শোনানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, অর্থনৈতিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। দেশটিকে অপার সম্ভাবনা ও সুযোগের হিসেবেও অভিহিত করেন তিনি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব উপলক্ষে পাঠানো এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে বাইডেন বলেন, আমি আপনাকে ও বাংলাদেশের জনগণকে এই অভূতপূর্ব অর্জনের জন্য অভিনন্দন জানাই। বাইডেন তার অভিনন্দন বার্তায় শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনি ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছেন। এটি বিশ্বে উদারতা ও মানবতার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। এই সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র অংশীদার হিসেবে কাজ করবে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন আরও বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বকে যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্ব দেয়। আমরা বিশ্বাস করি, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি উভয় দেশের প্রতিশ্রুতি দৃঢ় অংশীদারিত্বের ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।
মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েব এরদোগান। বাংলাদেশ সফরে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে এরদোগান বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি যা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। এ জন্য আমার পক্ষে এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। তবে যদি পরিস্থিতি ভালো হয়, বাংলাদেশ সফরের ইচ্ছা আমার আছে। তিনি বলেন, ‘দুই দেশের জনগণের মধ্যে ভ্রাতৃত্বমূলক অনুভূতি আমাদের সম্পর্ককে আরও উন্নত করার জন্য ইচ্ছাশক্তিকে দৃঢ় করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, আপনার পিতা, বাংলাদেশের প্রথম প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর রহমান জাতির জন্য সংগ্রাম ও ত্যাগের মাধ্যমে বিংশ শতাব্দীর বিখ্যাত রাষ্ট্রনায়কদের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছেন। আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তীর বছরে আমাদের সম্পর্ক ও সহযোগিতা আরও গভীর হবে।
বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একজন অসাধারণ নেতা ছিলেন। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে পাঠানো এক বার্তায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের সময়ে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীও পালন করছে। বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমি নিশ্চিত যে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার জন্য যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই দেশের গঠনমূলক সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি পাবে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেস বলেছেন, পঞ্চাশ বছর আগে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জন্ম নেওয়া বাংলাদেশ উন্নয়ন ধরে রেখে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও অবদান রেখে চলেছে। জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশ সামাজিক উন্নয়ন ও দুর্যোগ মোকাবিলা ও প্রস্তুতির বিষয়ে অসাধ্য সাধন করেছে। নিম্ন আয়ের দেশের তালিকা থেকেও বাংলাদেশ বেরিয়ে এসেছে। গুতেরেস বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সর্বোচ্চ সংখ্যক সেনার অংশগ্রহণ, ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামে অংশীদারিত্ব এবং মিয়ানমার থেকে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার মাধ্যমে বিশ্ব সমাজে অবদান রেখে চলেছে বাংলাদেশ।
Leave a Reply