ঢাকার মোহাম্মদপুরে আওয়ামী লীগের কার্যালয় এখন বিএনপির দখলে

সাভারের হেমায়েতপুর। মূল সড়ক থেকে একটু ভেতরে জয়না বাড়ি রোড। এখানকারই স্থানীয় এক বাজারে গিয়ে চাঁদাবাজির তথ্য পাওয়া গেলো।

দোকানিরা জানাচ্ছেন, আগে আওয়ামী লীগের লোকজন চাঁদা তুললেও এখন এর নিয়ন্ত্রণ ‘অন্য গ্রুপের’ হাতে।

প্রতিদিন দোকানপ্রতি তোলা হচ্ছে দুইশত টাকা করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকানি বলছিলেন, “আওয়ামী লীগ এখন নাই। কিন্তু এরপরও দুইদিন চাঁদা দিলাম। আইসা কয় টাকা মাফ নাই। হ্যারা নাকি এখন টাকা তুইল্যা অন্য গ্রুপের কাছে দিতাছে।”

অন্য গ্রুপ মানে কী এমন প্রশ্নে অবশ্য খোলাসা করে কিছু বলেননি তিনি।

“আগে যে ম্যানেজার কালেকশন করতো, সে ছিল আওয়ামী লীগের ম্যানেজার। ঐ ম্যানেজারই কালেকশন করতাছে। এখন টাকা নিয়া সে কারে দেয়, সেই প্রশ্ন আর করি নাই।”

আরেকজন দোকানি জানালেন, আগের মতোই তিনি দুইশত টাকা করে চাঁদা দিচ্ছেন।

“আমি একদিন দিছি দুইশত টাকা। পরের দিন দোকান খুলি নাই, টাকাও দেই নাই। আজকে খুলছি, এখন টাকা দেয়া লাগবে।”

বাংলাদেশে কোনো একটি সরকার পরিবর্তনের পর ব্যক্তির বদল ঘটলেও দুর্নীতি, আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি কিংবা দখলের যে পুরনো ব্যবস্থা, সেটার পরিবর্তন খুব একটা হয় না।

এবার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও কমবেশি একই চিত্র দেখা যাচ্ছে।

বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি, প্রভাব খাটানো এমনকি দখলের মতো অভিযোগ উঠছে বিশেষত বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।

যদিও অন্তবর্তীকালীন সরকার তো বটেই খোদ বিএনপির শীর্ষ নেতাদের পক্ষ থেকেও বলা হচ্ছে এ ধরনের ঘটনায় কোনো ছাড় না দেয়ার কথা।

কিন্তু এতে করে কি চাঁদাবাজি আর দখল বন্ধ হয়েছে? বাস্তবতা অবশ্য সেটা বলছে না।

সাভারের হেমায়েতপুরে সব স্থানে যে চাঁদাবাজি হচ্ছে এমন নয়। বিশেষত মূল সড়ক এবং সংলগ্ন বাসস্ট্যান্ড, টেম্পু স্ট্যান্ড এবং দোকানগুলোতে কেউ চাঁদা চাইতে আসছে না বলেই জানাচ্ছেন দোকানদাররা।

ইমরান আলী নামে একজন পোশাকের দোকানি বলছেন, আগে চাঁদাবাজি হলেও এখন আর কেউ আসছে না।

“এখনতো সবখানে ছাত্র। সবাই বলে গেছে, কেউ চাঁদা নিতে আসলে ফোন করে জানাইতে। এছাড়া মাইকিংও হইছে। ফলে এখনও পর্যন্ত আমরা শান্তিতে আছি।”

তবে হেমায়েতপুরের একটু ভেতরে গেলে চাঁদাবাজির চিত্র স্পষ্ট হয়।

স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, জয়নাবাড়ি, যাদুরচর, শ্যামপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজির ঘটনা চলছে।

কিন্তু কারা করছে এসব এমন প্রশ্নে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলতে রাজি হলেন না।

তবে গোপনীয়তা রক্ষার শর্তে স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, এসব চাঁদার পেছনে আছে তাদের ভাষায় ‘বিএনপির লোকজন’।

রমিজ উদ্দিন (ছদ্মনাম) নামে একজন ব্যবসায়ী বলেন, “আগে আওয়ামী লীগের লোকজন দোকান, রিক্সা স্ট্যান্ড থেকে চাঁদা তুলতো। মূলত. সরকারি জায়গায় যেসব দোকান আছে সেগুলো থেকে ভাড়ার নামে চাঁদা তোলা হয়। এগুলো সব আওয়ামী লীগের ব্যানারে হয়েছে। পট পরিবর্তনের পরে এখন বিএনপির সাইনবোর্ড লাগায়ে ঐ গ্রুপটাই আবার শুরু করছে। তাদের পেছনে আছে বিএনপির লোকজন।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *